
উদ্দেশ্য ছিল তেল জাতীয় ফসলের বীজ উৎপাদন। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে হয়ে ওঠে সমন্বিত কৃষি খামার। মাত্র কয়েক বছরের মাথায় পুরো খামার রূপান্তরিত হয়েছে কৃষি পর্যটন কেন্দ্রে। বলা হচ্ছে, নোয়াখালীর সুবর্ণচরের বিএডিসি বীজ বর্ধন খামারের কথা।
মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক পরিবেশে একই সঙ্গে চলছে কৃষক প্রশিক্ষণ, বীজ উৎপাদন, বিপনন আর গুদামজাতের কাজ। সঠিকভাবে পরিচালিত হলে বছরে এই খামার থেকে কয়েক কোটি টাকা আয়ের আশা কর্তৃপক্ষের।
দৃষ্টি নন্দন মূল ফটক। ভেতরে ঢুকতেই পাকা সড়কের পাশে সারিবদ্ধ ফুল আর ফলের গাছ। লেকের স্বচ্ছ পানিতে ভাসছে হাঁসের দল। ঘুঘুদের ধান খাওয়া আর পাখির ডাকে মুখর নোয়াখালির সুবর্ণচরের বিএডিসির বীজ বর্ধন খামার।
২০ হাজারের বেশি গাছ আর আমন-আউশের খেতের শোভা, দৃষ্টি জুড়ানো এই খামারবাড়িকে পরিণত করেছে পর্যটন কেন্দ্রে। তাই তো এই মনোমুগ্ধকর পরিবেশে দৃষ্টি জুড়াতে হাজির হন দর্শনার্থীরা।
এক পর্যটক বলেন, এটা আসলে পর্যন্ট কেন্দ্র হিসেবে পরিণত হয়েছে। এখানে শিশু থেকে বৃদ্ধ-সব শ্রেণির মানুষ ঘুরতে আসেন। নারী-পুরুষের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে এটি।
সুবর্ণচরের কৃষক ও তাদের পরিবারের ভ্রমণের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে এই খামার। সৌন্দর্য উপভোগের পাশাপাশি হাতে কলমে প্রশিক্ষণ নিয়ে সমৃদ্ধ হচ্ছেন তারা।
এক কৃষক বলেন, এখান থেকে আমরা ভালো মানের বীজ পাচ্ছি। সেটা চাষাবাদ করছি। পাশাপাশি প্রযুক্তিগত সহায়তা পাচ্ছি। ফলে ফসলের বাম্পার ফলন হচ্ছে।
দেশীয় আবহাওয়ায় উদ্ভাবিত বীজ দ্বারা উৎপাদিত ফলফলাদিতে রয়েছে প্রচুর পুষ্টি। তাই এটি জেলার মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণেও সহায়ক হবে বলে দাবি পুষ্টি বিশেষজ্ঞদের।
পুষ্টি বিজ্ঞানী ড. মো. নুর আলম সিদ্দিকী বলেন, বিএডিসির এই খামের উন্নতমানের বীজ উৎপাদন হচ্ছে। এটা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে দিতে হবে। এতে খাদ্য চাহিদা পূরণ হবে। পাশাপাশি পুষ্টি চাহিদাও মিটবে।
ভবিষ্যতে নিজেদের আয়েই খামার চলবে বলে আশা কর্তৃপক্ষের। নোয়াখালী সুবর্ণচর বিএডিসি বীজ বর্ধন খামারের প্রকল্প পরিচালক মো. আজিম উদ্দিন বলেন, সরিষা, সূর্যমুখী, ডাল, তরমুজ, বাদাম বীজ উৎপাদন করি আমরা। পাশাপাশি কৃষকদের নানা সচেতনামূলক বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিই আমরা। যাতে তারা ভালোভাবে চাষাবাদ করতে পারে। সেই সোনার ফসল ঘরে তুলতে পারে।
২০১৪ সালে শুরু হওয়া ১৬৭ একরের এই খামারে প্রতি বছর ৩০০ টন বীজ উৎপাদন করা হয়।