ইলিশের দাম নির্ধারণ উদ্যোগে ক্ষোভ ব্যবসায়ীদের, সন্তুষ্ট ক্রেতারা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৫, ২২:৪০

চাঁদপুরে ইলিশের বাজারে অস্থিরতা কমাতে সরকারের পক্ষ থেকে মূল্য নির্ধারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে ভিন্নমত পোষণ করছেন ইলিশ ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, বাজারে সরবরাহ সংকটের মধ্যেই দামের বিধিনিষেধ চাপিয়ে দিলে বিক্রি করা অসম্ভব হয়ে পড়বে।
জানা গেছে, ১৭ জুন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে একটি প্রস্তাবনা পাঠান। পরে ২৬ জুন তা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ হয়ে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে পেশ করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা তাতে নীতিগত সম্মতি দেন।
এই প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার খবরে সাধারণ ক্রেতাদের মাঝে স্বস্তি দেখা দিলেও ব্যবসায়ীরা বিষয়টিকে অবাস্তব বলে দাবি করছেন। অনেকের মতে, সরবরাহ ঘাটতির বাজারে নির্দিষ্ট মূল্য বেঁধে দিলে তা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।
বিপনীবাগ বাজারের এক বিক্রেতা জাকির হোসেন বলেন, “আমরা আড়ত থেকে কেজিতে কিনে খুচরা বিক্রি করি। এখন বাজারে ইলিশই নেই, তার ওপর আবার দাম বেঁধে দিলে তো ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে।”
চাঁদপুর বড় স্টেশন মাছঘাটের ব্যবসায়ী মনছুর আহমেদ বলেন, “ইলিশ তো কোনো কারখানায় তৈরি হয় না, এটি প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল। সরকার যদি দাম ঠিক করে দেয়, তাতে সমস্যা আরও বাড়বে। দাম কমবে তখনই, যখন বাজারে সরবরাহ বাড়বে।”
চাঁদপুর বড়স্টেশন মৎস্য বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শবে বরাত সরকার বলেন, “কাঁচা মাছের বাজারে আগাম মূল্য নির্ধারণ বাস্তবসম্মত নয়। কারণ প্রতিদিন দাম ওঠানামা করে। এমন বাজারে দাম বেঁধে দেওয়া মানেই সমস্যা তৈরি করা।”
অন্যদিকে, মূল্য নির্ধারণের উদ্যোগে আশার আলো দেখছেন সাধারণ ক্রেতারা। বৃহস্পতিবার বিপনীবাগ, পালবাজার ও ওয়ারলেস বাজারে কথা হয় একাধিক ক্রেতার সঙ্গে। তাদের দাবি, দাম বেঁধে দিলে ইলিশ কেনা সহজ হবে।
বিপনীবাগ বাজারে ইলিশ কিনতে আসা মোহাম্মদ আলী বলেন, “চাঁদপুরে ইলিশ হলেও দাম অনেক বেশি। সরকার যদি দাম নির্ধারণ করে দেয়, তাহলে আমরা একটু স্বস্তি পাব।”
আরেক ক্রেতা পূজা বলেন, “ছোট দুটো ইলিশ অনেক দাম দিয়ে কিনেছি। দাম আর নিয়ন্ত্রণে না এলে সাধারণ মানুষের পক্ষে ইলিশ কেনা অসম্ভব হয়ে উঠবে।”
এ বিষয়ে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন জানান, “প্রধান উপদেষ্টা নীতিগত অনুমোদন দিয়েছেন। তবে এখনো নির্দিষ্ট দাম ঠিক হয়নি। সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করা হবে।”