ল্যাম্পি স্কিনের থাবা: গরু মরছে, খামারি কাঁদছে

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ জুলাই ২০২৫, ২০:৪৪

ছবি সংগৃহীত
ল্যাম্পি স্কিনে গবাদিপশু খাতে মহাসংকট, দিশেহারা খামারিরা বিভিন্ন খামার ও গৃহস্থের তথ্য অনুযায়ী, গত এপ্রিল থেকে এ রোগে গরু আক্রান্ত হতে শুরু করে এবং মে মাসে তা ভয়াবহ রূপ নেয়। গত দুই মাসেই দেড় হাজারের বেশি গরু মারা গেছে, যাদের মধ্যে অধিকাংশই বিদেশি জাতের বাছুর। বর্তমানে হাজার হাজার গরু ও বাছুর আক্রান্ত রয়েছে।
সবচেয়ে উদ্বেগজনক হলো, জেলা পশু হাসপাতালগুলোতেও
মিলছে না কার্যকর কোনো চিকিৎসা। ফলে খামারিরা হোমিও চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছেন
নিরুপায় হয়ে। তবে এখানেও গুনতে হচ্ছে চড়া ফি। অনেক সময় চিকিৎসা না জানলেও কিছু
হাতুড়ে চিকিৎসক চিকিৎসার নামে প্রতারণা করে খামারিদের কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা
হাতিয়ে নিচ্ছেন।
ল্যাম্পি স্কিন রোগে গরু শুধু আক্রান্তই হচ্ছে না, যারা বেঁচে যাচ্ছে তারাও হারাচ্ছে উৎপাদনশীলতা। দুধ কমে যাচ্ছে,
ওজন কমে যাচ্ছে, প্রজনন ক্ষমতাও
বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে খামারিরা একদিকে চিকিৎসার খরচ সামলাতে পারছেন না, অন্যদিকে গরু বিক্রি করেও লোকসান গুনতে হচ্ছে।
একাধিক
খামারি জানিয়েছেন, তারা অনেক আশা নিয়ে খামার গড়েছিলেন, কিন্তু
এখন সব কিছুই অনিশ্চিত। দ্রুত কার্যকর টিকা এবং চিকিৎসা ব্যবস্থা না আসলে রাজবাড়ীর
গবাদিপশু খাত মুখ থুবড়ে পড়বে বলেই আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
দেশের কয়েকটি জেলার ভিতর রাজবাড়ী জেলায় ল্যাম্পি স্কিন রোগ
ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। গবাদিপশু খাতে এই ভাইরাসজনিত রোগটি এখন এক দুঃস্বপ্ন হয়ে
উঠেছে খামারি ও কৃষকদের জন্য। বিশেষ করে ছোট ও মাঝারি খামারিরা পড়েছেন চরম বিপাকে।
প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে নতুন নতুন গরু আক্রান্ত হচ্ছে, বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা।
গ্রামের পেছনের ছোট ছোট গোয়ালঘরে অসুস্থ বাছুর গরুগুলোর দেহে
দেখা যাচ্ছে ফুসকুড়ির মতো গুটি। কিছু গুটিতে ফেটে গিয়ে রক্তমাখা ক্ষতের মতো অবস্থা
তৈরি হয়েছে। অনেক বাছুর একেবারেই নিস্তেজ হয়ে মাটিতে পড়ে থাকে, কোনো কিছু খেতে পারে না এমনকি পানি পর্যন্ত খাচ্ছে না।
প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা
জানান, ল্যাম্পি স্কিন একটি ভাইরাসজনিত রোগ । ,
"আমরা খামারিদের পরামর্শ দিচ্ছি আক্রান্ত গরুকে আলাদা রাখতে
এবং খামার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে।
দেশের গবেষণাগারে ল্যাম্পি স্কিনের টিকা তৈরির কাজ চলছে।
টিকা বাজারে এলে এই সংকট অনেকটাই কমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি
ল্যাম্পি স্কিন রোগ খামারিদের জন্য এক ভয়াবহ সংকটে পরিণত হয়েছে। রোগ
প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে
এ গবাদিপশু খাত ভয়াবহ বিপর্যয়ের দিকে
এগোবে। সরকারি উদ্যোগ, সচেতনতা এবং সঠিক চিকিৎসা
ব্যবস্থার মাধ্যমে এই সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব —এটাই এখন
খামারিদের শেষ আশার জায়গা।