Logo
×

Follow Us

প্রাণিসম্পদ

ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মাঝে হাড্ডিসার বাছুর বিতরণ

Icon

চকরিয়া প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৫, ১৯:৩১

ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মাঝে হাড্ডিসার বাছুর বিতরণ

চকরিয়ায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মাঝে হাড্ডিসার বাছুর বিতরণের অভিযোগ উঠেছে। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর আর্থসামাজিক ও জীবন মানোন্নয়নে সরকারি সহায়তা হিসেবে তাদের মাঝে বিতরণকৃত বকনা বাছুর গুলোর মান নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ততায় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের সরবরাহকৃত কঙ্কালসার দূর্বল ও রোগাক্রান্ত বাছুর বিতরণ করা হয়েছে। এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে সমালোচনার ঝড়।

জানা যায়, সমতল ভূমিতে বসবাসরত অনগ্রসর ক্ষুদ্র নৃ-জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক ও জীবন মানোন্নয়নের লক্ষ্যে বুধবার (২৫ জুন) দুপুর দেড়টায় চকরিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল প্রাঙ্গণে ‘সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের' আওতায় ৮২ জন উপকারভোগীর মাঝে ৮২টি বকনা বাছুর বিতরণ করা হয়। চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বকনা গরু বিতরণ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আতিকুর রহমান উপকারভোগীদের মাঝে এসব গরু তুলে দেন। এ সময় উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. আরিফ উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

চকরিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল অফিসের সামনের মাঠে সারিবদ্ধভাবে রাখা হয় বাছুর গুলো। লটারির মাধ্যমে গরু গুলো বিতরণ করা হয়।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরে বকনা বাছুর নিতে আসা কয়েকজন উপকারভোগী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গত কয়েক বছর আগে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মাঝে বিতরণকৃত বাছুর সাইজ ছিল অনেক বড়। গরুর জাতও ছিল উন্নত মানের। ওইসব গরু কম করে হলেও প্রতিটির মূল্য ৫৫ থেকে ৬০ হাজার টাকা দামের হতো। কিন্তু বর্তমানে যেসব গরু বিতরণের জন্য আনা হয়েছে সেগুলো সাইজে অনেক ছোট। আর গরু গুলোও দেখতে রোগাক্রান্ত ও কঙ্কাল শ্রেণির গরু। এসব গরুর দাম ৪০-৫০ হাজার টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মাঝে বিতরণের জন্য আনা এসব বকনা গরুর মূল্য কতো ধরা হয়েছে সে ব্যাপারেও তাদের কোন কিছু অবহিত করেনি কর্তৃপক্ষ।

চকরিয়া সিনিয়র সাংবাদিক এম আর মাহমুদ তার ফেসবুক ওয়ালে লিখেন, ‘কর্তৃপক্ষ এত মোটা তাজা গরুগুলো কোথায় পেলেন জানতে ইচ্ছে করে। খালি চোখেও গরুগুলোর হাড় গণনা করা যাবে। আবার কেউ কেউ এটিকে 'লুটপাট প্রকল্প' অভিহিত করে লিখেছেন, এটা কোনো জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্প নয়, গরিবের হক মেরে টাকা আত্মসাতের প্রকল্প। এ ধরণের অনিয়মে শুধু সরকারি অর্থ লোপাট নয়, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বিশ্বাস ও বর্তমান সরকারের উন্নয়ন প্রক্রিয়াকেই প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. আরিফ উদ্দিন বলেন, চকরিয়ায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মাঝে বিতরণ করা সব বকনা গরু গুলো শারীরিকভাবে সুস্থ ছিল। গরুগুলো ২০- ২২ ঘণ্টা গাড়ি করে উত্তরবঙ্গ আনার ফলে একটু দূর্বল মনে হয়েছে। গরু গুলোকে প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখেছি। সেগুলো যথারীতি খাবারও গ্রহণ করেছে।

তিনি আরও বলেন, বিতরণ করা গরুগুলো উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে ঠিকাদারের মাধ্যমে ক্রয় করা হয়নি। এগুলো প্রাণিসম্পদ দপ্তরের কেন্দ্রীয় ডিজি অফিস নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। তারা টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঠিকাদার নিয়োগ করে তাদের মাধ্যমেই গরুগুলো সংগ্রহ করে বিতরণের জন্য আমাদের অফিসে পাঠিয়েছেন। ডিজি অফিসের নির্দেশনা মতো বকনা গরুগুলো আমরা উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পক্ষ থেকে উপকারভোগীদের মাঝে বিতরণ করেছি মাত্র। সুতরাং এখানে গরু বিতরণ ও ক্রয় করার ক্ষেত্রে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের অনিয়ম দূর্নীতির কোন সুযোগ নেই।

উপকারভোগীদের মাঝে বিতরণকৃত বকনা গরুগুলো শারীরিকভাবে অনেকটা সুস্থ এবং ভাল মানের গরু বলেও দাবী করেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. আরিফ উদ্দিন।

Logo