Logo
×

Follow Us

কৃষি

কচুর লতিই বদলে দিতে পারে আপনার ভাগ্য!

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৮ আগস্ট ২০২৫, ১৭:৫৫

কচুর লতিই বদলে দিতে পারে আপনার ভাগ্য!

ছবি সংগৃহীত

কৃষক ও যুবসমাজের জন্য নতুন আয়ের সম্ভাবনা

দেশের অনেক অঞ্চলে অবহেলিত ও আগাছা ভেবে ফেলে দেওয়া কচুর লতি এখন অনেকের আয়ের প্রধান উৎস হয়ে উঠছে। বিশেষ করে যারা কৃষিকাজে নতুন, কিংবা তরুণ যুবকরা উদ্যোক্তা হতে চাইছেন, তাদের জন্য কচুর লতি চাষ হতে পারে একটি সহজ, লাভজনক এবং কম ঝুঁকির কৃষি উদ্যোগ।

কচুর লতি: কী এবং কেন এত সম্ভাবনাময়?

কচুর লতি মূলত পানি বা স্যাঁতসেঁতে জমিতে জন্মায়। এটি দ্রুত বেড়ে ওঠে এবং বছরে একাধিকবার সংগ্রহ করা যায়। দেশের বাজারে এর চাহিদা ব্যাপকশুধু গ্রামে নয়, শহরেও এর কদর বাড়ছে। কচুর লতির ভর্তা, ভাজি, তরকারিসবই মানুষের রসনা তৃপ্ত করে। দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় কৃষকরা এখন লতিরাজ জাতের কচু চাষ করে কৃষিতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলেছেন। স্থানীয় কৃষকদের ভাষ্য অনুযায়ী, লতিরাজ কচুর লতি, পাতা এবং কন্দতিনটিই বিভিন্নভাবে ব্যবহারযোগ্য। এর লতি ও কন্দ ব্যবহার করা হচ্ছে জনপ্রিয় সবজি হিসেবে, আর পাতা খাওয়ার উপযোগী শাক হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে প্রতিদিনের রান্নায়। অনেকে আবার পাতা দিয়ে তৈরি করছেন জৈব সার, যা জমির উর্বরতা বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে। এক ফসলেই যখন একাধিক ব্যবহারের সুবিধা মেলে, তখন তা কৃষকদের জন্য হয় লাভজনক ও পরিবেশবান্ধব একটি বিকল্প। ফলে লতিরাজ কচু এখন শুধু পুষ্টির উৎস নয়, বরং হয়ে উঠেছে উন্নয়ন, আয়ের এবং টেকসই কৃষির প্রতীক

কেন বেছে নেবেন কচুর লতি চাষ?

·        কম পুঁজিতে চাষ সম্ভব

·        জমি কম হলেও হবেপুকুরপাড়, ডোবা, এমনকি বস্তায়ও চাষ সম্ভব

·        ৩৫-৪৫ দিনের মধ্যে লতি সংগ্রহ

·        বাজারে প্রতি কেজি ২০৪০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি

·        চাহিদা সারা বছর, বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে বেশি

·        সহজ রপ্তানি পণ্য হিসেবেও বিবেচনায় আসছে

 কচুর লতি চাষের সহজ নির্দেশনা:

1.   জমি নির্বাচন:

o   কম পানি জমে এমন জমি বা পুকুরপাড়ে চাষ উপযোগী

o   ছায়াযুক্ত ও স্যাঁতসেঁতে জমি উত্তম

2.   রোপণ:

o   পুরনো কচুর ডগা বা লতির টুকরা মাটিতে পুঁতে দিতে হবে

o   রোপণের ১০১২ দিনের মধ্যে লতি বের হতে শুরু করে

3.   পরিচর্যা:

o   সপ্তাহে ১২ বার হালকা পানি

o   আগাছা পরিষ্কার

o   প্রয়োজন মতো জৈব সার প্রয়োগ

4.   ফসল সংগ্রহ:

o   রোপণের ৪০ দিনের মাথায় লতি সংগ্রহ শুরু

o   প্রতি গাছ থেকে ৭৮ বার পর্যন্ত লতি তোলা যায়

 কচুর লতির বাজার সম্ভাবনা:

বর্তমানে স্থানীয় বাজারে চাহিদা বাড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন সুপার শপ, হোটেল-রেস্টুরেন্ট, অনলাইন মার্কেটপ্লেস এ কচুর লতির বিক্রি বাড়ছে। কিছু উদ্যোক্তা প্যাকেটজাত করে ঢাকায় সরবরাহ করে মাসে হাজার হাজার টাকা আয় করছেন। দেশের বাইরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যেও এর কদর বাড়ছে, যার ফলে রপ্তানির সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে।

 
যুবসমাজের জন্য দারুণ সুযোগ

অনেক তরুণ এখন কৃষিকাজে আগ্রহী হলেও মূলধন, জমি বা ঝুঁকির কারণে পিছিয়ে যান। কচুর লতি চাষ তাদের জন্য একটি সহজ ও লাভজনক স্টার্টআপ মডেল হতে পারে। শুধু নিজেই নয়গ্রামে ছোট দল গঠন করে, কিংবা কৃষি কো-অপ তৈরি করেও চাষ ও বিপণন করা যায়।

 
শেষ কথা:

পরিবারের পুকুরপাড়ের ফেলে রাখা জায়গা, কিংবা বাড়ির পাশে ছোট জায়গা দিয়েই শুরু করা যায় কচুর লতির যাত্রা। সঠিক পরিকল্পনা আর একটু শ্রম আপনাকে দিতে পারে নিয়মিত আয়। তাই দেরি না করে আজই শুরু করতে পারেনকচুর লতি দিয়েই হোক আপনার ভাগ্য পরিবর্তনের গল্প।


Logo